বহুসাংস্কৃতিক সাহিত্য ও সমকালীন বিশ্বসাহিত্য
ইতালীয় অনুবাদক , সৃজনশীল সাহিত্যিক এবং গবেষিকা ডক্টর আরিয়ানা দাগনিনো বিশ্বসাহিত্য ও তুলনামূলক সাহিত্য সম্পর্কে বর্তমান নিবন্ধে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন।
বিশ্বায়নের পরিবর্তিত সাংস্কৃতিক এবং সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গীর প্রভাবে জাতীয়বাদে লেগেছে নতুন ঢেউ,যার সঙ্গে তাল মেলাতে দেশীয় লেখক ও সাহিত্যিকদের বিষয়গত উপাদান ও শৈল্পিক উপস্থাপনার ক্ষেত্রে এক নতুন সংকটের সম্মুখীন হয়েছে ।
বিশ্বায়নের পরিবর্তিত সাংস্কৃতিক এবং সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গীর প্রভাবে জাতীয়বাদে লেগেছে নতুন ঢেউ,যার সঙ্গে তাল মেলাতে দেশীয় লেখক ও সাহিত্যিকদের বিষয়গত উপাদান ও শৈল্পিক উপস্থাপনার ক্ষেত্রে এক নতুন সংকটের সম্মুখীন হয়েছে ( থমসেন ম্যাপিং দ্রষ্টব্যঃ )। অন্য কথায় বলা যায় , বিশ্বজুড়ে শিক্ষিত জনতার জগতের নানান বসতিগুলিতে বহুজাতিক উপস্থিতিতে পারস্পরিক সংযোগ ও সংস্পর্শে একরকম পরিবর্তন বা পরিব্যাক্তি ঘটে চলছে ,ফলে নতুন এক সৃজনশীল শিল্প এবং সাহিত্যিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে আত্মীয়তার নতুন ধারণা জন্ম নিচ্ছে, সেইসাথে অংশীদারিত্ব এবং পরিচয়ের সংজ্ঞাগুলিও বদলে যাচ্ছে । বিদ্বান পণ্ডিত ও সাহিত্যবোদ্ধা মানুষেরা এই অগ্রগামী সামাজিক, সাংস্কৃতিক, এবং সাহিত্যের নতুন দৃশ্যপটে নতুনতর প্রাসঙ্গিক সাহিত্য বিশেষ করে জাডি স্মিথ, হানিফ কুরেশি, কামিলা শামসি, মাইকেল ওন্ডাতজে, ম্যাক্সিন হং কিংস্টন, বা জয় নোজোমি কোগাওয়ার তথাকথিত “ইংরেজিভাষার নতুন সাহিত্য” বা “নিউ লিটারেচার ইন ইংলিশ” বিশ্লেষণ করার ক্ষেত্রে নতুন কোন দিগন্ত চিহ্নিত করার তাগিদ অনুভব করছেন। এই কারণেই বিগত দুই দশকে সাংস্কৃতিক নৃবিজ্ঞান, দর্শন এবং তুলনামূলক সংস্কৃতি চর্চার ক্ষেত্রে বহুসাংস্কৃতিক সাহিত্য ( ট্রান্সকালচারাল লিটারেচার ) এবং বহুজাতিকতত্ত্বগুলি ( ট্রান্সন্যাশনাল থিওরাইজেশন ) সাহিত্য পাঠ ও আলোচনার কেন্দ্রে বিশেষজ্ঞদের আকর্ষণ করছে ।
বিশেষ করে জার্মানিতে, একদল সাহিত্যিক পণ্ডিত ( ফ্রাঙ্ক শুলজে-ইংলার, সিসি হেলফ, সাব্রিনা ব্রাঙ্কাটো প্রমুখ ) উত্তর ইউরোপে ট্রান্সকালচারাল ইংলিশ স্টাডিজের চর্চা শুরু করেছেন। পণ্ডিতদের আরেকটি দল ফার্নান্দো অর্টিজের ট্রান্সকালচারেশনের ধারণার উপর ভিত্তিকরে ‘দ্য নর্ডিক নেটওয়ার্ক ফর লিটারারি ট্রান্সকালচারেশন স্টাডিজ’-এর জন্ম দিয়েছেন ।
এখানে ট্রান্সকালচারাল ইংলিশ স্টাডিজের শুল্জ-ইংলারের “ট্রান্সকালচারাল ইংলিশ স্টাডিজ তত্ত্ব একটি সত্যিকারের ট্রান্সন্যাশনাল এবং ট্রান্সকালচারাল দৃষ্টিকোণকে বোঝায় যা লেখক-লেখিকাদের সাহিত্যচর্চাকে অন্তর্ভুক্ত করতে সক্ষম যা একটি মাত্র নির্দিষ্ট কোনো জাতীয় সাহিত্য ক্ষেত্রের সঙ্গে সম্পর্কিত হতে পারে না বরং তাঁদের জটিল রচনাগুলির সাথে সম্পর্কিত এবং সাহিত্যের পৃথক পৃথক রচনাগুলিকে শুধুমাত্র স্থানীয় বা আঞ্চলিক আধুনিকতার সাথে সাথে তাদের নির্দিষ্ট সামাজিক, ভাষাগত এবং সাংস্কৃতিক পরিমন্ডলের সঙ্গেই নয়, ইংরেজি সাহিত্যের বিশ্বব্যাপী ক্ষেত্রের সাথেও যুক্ত করে। – ভাষা সাহিত্য এবং পারস্পরিক সংস্পর্শী মিথস্ক্রিয়া এবং এর ফলে সৃষ্ট রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়ার নির্দিষ্ট রূপ।”
যদিও এই দুটি তাত্ত্বিকদল মূলত ইংরেজি ভাষায় লিখিত সাহিত্যের অধ্যয়ন বা চর্চার উপর এবং বিশেষ করে “ইংরেজিতে নতুন সাহিত্য” চর্চার দিকে মনোনিবেশ করে, তবে সাহিত্যের যে কোনও ভাষার চর্চার জন্য অনুরূপ পদ্ধতি ও প্রকরণ অবলম্বন করা যেতে পারে। অন্য যে কোনো ভাষায় প্রকৃতিতে দৃশ্যমান বৈশিষ্ট্যগুলিকে অন্তর্নিহিতভাবে “ট্রান্সকালচারাল” হিসেবে সংজ্ঞায়িত করা যেতে পারে। (চলবে )